রাখে হরি মারে কে
হরি একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সৎ ও পরিশ্রমী মানুষ। তার স্ত্রী লক্ষ্মী এবং একমাত্র ছেলে রাহুলকে নিয়ে সে তার ছোট্ট সংসারে সুখে দিন কাটায়। তবে হরির জীবন এত সহজ ছিল না। গ্রামের জমিদার মাধব রায় এবং তার দলবল হরির জমি কেড়ে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে। জমি না ছাড়ার কারণে হরিকে তারা বারবার হুমকি দেয় এবং এক সময় তাকে ফাঁদে ফেলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করে।
একদিন, হরি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে জমিদারের গুন্ডারা তাকে মারধর করে এবং অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। এই ঘটনায় গ্রামে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। হরির স্ত্রী লক্ষ্মী স্থানীয় থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ কোনো সাহায্য করে না, কারণ জমিদার মাধব রায়ের সাথে তাদের হাত মেলানো।
হরি আহত হলেও, তার মানসিক শক্তি অটুট থাকে। সে গ্রামের মানুষদের সাহায্য চায়, কিন্তু সবাই জমিদারের ভয়ে দূরে সরে যায়। একমাত্র বন্ধু রঘু তার পাশে দাঁড়ায়। এদিকে, জমিদারের ষড়যন্ত্র আরও গভীর হয়। তারা হরির বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে এবং রাহুলকে অপহরণ করার চেষ্টা করে।
এক রাতের ঘটনা হরির জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। জমিদারের গুন্ডারা যখন হরির বাড়িতে আগুন ধরায়, তখনই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। পুরো গ্রামে বজ্রপাত আর ঝড় বয়ে যায়। হরি এবং তার পরিবার কোনো ক্ষতি ছাড়াই বেঁচে যায়। হরি বিশ্বাস করে, এটি ঈশ্বরের ইচ্ছা যে সে এবং তার পরিবারকে কেউ মারতে পারবে না।
হরি তার শক্তি এবং বুদ্ধি দিয়ে জমিদারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। সে গ্রামের মানুষদের একত্রিত করে তাদের জমি রক্ষা করার আন্দোলন শুরু করে। এক সময় গ্রামের মানুষ হরির পাশে দাঁড়ায় এবং জমিদার মাধব রায় গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়।
শেষ দৃশ্যে, হরি তার জমি ফিরে পায় এবং পরিবারসহ নতুন করে জীবন শুরু করে। গল্পের শেষে উঠে আসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা:
সত্য ও সততার পথ কখনো বৃথা যায় না। রাখে হরি মারে কে।